জুম্মন কসাই: এক ভৌতিক বাজারের রহস্য

লেখক : মাসুম

ব্লগ :  EditorPost

 














শুরুটা ঠিক যেন সিনেমার মতো

সেদিন ছিল শুক্রবার। গ্রামের হাট বসেছে, আর এই হাটের এক কোণায় দাঁড়িয়ে ছিল এক রহস্যময় লোক। কেউ চেনে না, কেউ জানে না কোথা থেকে এসেছে। তবে সবাই তাকে এখন এক নামে চেনে—“জুম্মন কসাই”।

জুম্মনের দোকানটা আলাদা। মাংসের গন্ধ নয়, বরং তার চারপাশে এক অদ্ভুত ধূপের ঘ্রাণ, মাথার উপরে একটা ফ্যান ঘোরে অথচ বিদ্যুৎ সংযোগ নেই! তার দোকানের গরু বা খাসির মাংস সস্তা, অথচ এতটাই সুস্বাদু যে একবার খেলে মানুষ ভুলে যায় সে কী খাচ্ছে।


গ্রামের মানুষ বদলে যেতে লাগলো

প্রথম কয়েক সপ্তাহেই জুম্মনের কাস্টমার বাড়তে লাগল। কিন্তু অদ্ভুত ঘটনা হলো—যারা তার দোকান থেকে মাংস কিনে খাচ্ছে, তারা কিছুদিন পর কেমন যেন শান্ত, চুপচাপ আর ভীত-ভীত দেখায়। কেউ কেউ তো কথাই বন্ধ করে দিয়েছে। কেউ আবার রাতে উঠে হাটে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে—চোখে ঘুম নেই, মুখে এক ফাঁকা হাসি!

গ্রামের পুরনো হাকিম, মান্নান সাহেব, বললেন — “এই মাংসে নিশ্চয় কিছু আছে! আমি শিওর!”


রহস্য উন্মোচনের অভিযান

তিনজন তরুণ ঠিক করল, তারা এই রহস্য ভেদ করবে। নাম: রুবেল, ফারিয়া আর মুন্না। তারা এক রাতে লুকিয়ে জুম্মনের দোকানে যায়। কিন্তু তারা যা দেখে, তা দেখে শিউরে ওঠে—

জুম্মন আসলে কসাই না, সে এক ধরণের জাদুকর, তার মূল উদ্দেশ্য হলো এক ভৌতিক বাজারে মানুষের আত্মা বিক্রি করা। সে রাত ৩টায় জাদু মন্ত্র পড়ত, আর তার দোকানের নিচে লুকানো টানেলে সেই আত্মাগুলো সংরক্ষণ করত। মানুষের মাংস নয়, সে বিক্রি করত মানুষের ইচ্ছা—যে ইচ্ছা মানুষকে পঙ্গু করে দেয়।


প্রতিশোধ ও ভয়ের রাত

তরুণরা পরিকল্পনা করে, এক রাতে তারা দোকানটা জ্বালিয়ে দেবে। কিন্তু জুম্মন বুঝতে পারে। ঠিক রাত ১২টা ৪৪ মিনিটে সে তিনজনকে ডাকে—“চলো, তোমাদের জন্য বিশেষ রান্না আছে!”

তখনই শুরু হয় পালানোর লড়াই। গ্রামের মাঝখানে হঠাৎ ঝড় শুরু হয়। দোকান থেকে একে একে বের হয়ে আসে মুখহীন সব আত্মা। কিন্তু তখনই হাজির হন মান্নান সাহেব—পুরনো দিনের এক হাকিম, যিনি জানতেন একমাত্র কি করলে এই অভিশাপ ভাঙা যায়।


শেষ যুদ্ধে জয়

মান্নান সাহেব তার পিতার রেখে যাওয়া একটি পুরনো কিতাব থেকে পড়ে এক বিশেষ আয়াত পড়েন। সাথে সাথে দোকান কেঁপে ওঠে, জুম্মনের শরীর ফেটে যেতে থাকে, আর আত্মাগুলো একে একে মুক্তি পায়।

জুম্মন শেষবারের মতো হেসে বলে—
“আমার মাংস শুধু শরীরের জন্য ছিল না, আত্মার স্বাদও ছিল...”

তারপরই সে গলে যায় দোকানের মেঝেতে।


আজও রহস্য রয়ে গেছে…

জুম্মনের দোকান আজ পরিত্যক্ত। কেউ আর ওদিক মাড়ায় না। কিন্তু রাত গভীর হলে, কেউ কেউ শুনেছে হাটের কোণ থেকে ভেসে আসে চাপ চাপ মাংস কাঁটার শব্দ।

আর তুমি যদি কখনো সেই বাজারে যাও, মনে রেখো—"জুম্মনের হাড়ির নিচে আজও আগুন জ্বলছে…"


শেষ কথা:
জুম্মন কসাইয়ের এই গল্পটা শুধুই একটি কল্পনাপ্রসূত রচনা, তবে একবার ভাবো—যদি সত্যি এমন কেউ থাকত? তুমি কী করতে?

Comments