Featured
- Get link
- X
- Other Apps
ছবির নীচে নাম
“একটি মিথ্যার নিচে চাপা পড়া একটি মেয়ের জীবন”
🔶 অধ্যায় ১: বেনীমাধবপুরের মেয়ে
বেনীমাধবপুর—একটা ছিমছাম ইউনিয়ন শহর আর গ্রাম মিশ্র একটা পাড়ার মতো। এখানে বাস করে তৃষা। হাইস্কুলে পড়ে, ক্লাস টেন। মেধাবী, চুপচাপ, কিন্তু চোখে যেন হাজারটা স্বপ্ন। কেউ ভাবে না, এই গ্রামের মেয়ে একদিন ভাইরালের কেন্দ্রে এসে পড়বে—তাও এক “MMS স্ক্যান্ডাল” নিয়ে।
তৃষার বাবা কলেজে ক্লার্ক, মা স্কুলে সহকারী শিক্ষক। পরিবারে একমাত্র মেয়ে, ভালোবাসায় মানুষ। পড়াশোনা, গান শেখা, আর মাঝে মাঝে নিজের হাতে মোবাইল দিয়ে ভিডিও বানানো ছিল তার নেশা।
তৃষার ইচ্ছে ছিল একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলবে। কিন্তু কখনো সাহস করেনি। কারণ, এই পাড়ায় মেয়েরা ক্যামেরার সামনে মানেই হাজার কথা, হাজার ফিসফাস।
🔶 অধ্যায় ২: মোবাইল, মেসেজ আর গোপন ভালোবাসা
তৃষার জীবনে আসে “রায়হান”—একাদশ শ্রেণির ছাত্র, স্থানীয় এক কলেজের।
বয়সে ২ বছরের বড়, কিন্তু মায়ায় অনেক গভীর।
তৃষার সঙ্গে প্রথম দেখা একটা কোচিং ক্লাসে।
আস্তে আস্তে কথা, কথা থেকে বন্ধুত্ব, বন্ধুত্ব থেকে ভালোবাসা।
তাদের প্রেম চলত মূলত মেসেজে, কল-রাতে চুপচাপ হেডফোনে কথা, আর মাঝে মাঝে দেখা স্কুলের পাশে পুকুরঘাটে।
একদিন রায়হান বলল—
“তৃষা, আমি তোকে নিয়ে ভিডিও করতে চাই। শুধু তুই আর আমি। আমাদের ভালোবাসার স্মৃতি।”
তৃষা একবারে রাজি না।
কিন্তু রায়হান বলে, “কাউকে দেখাব না, প্রাইভেট থাকবে। শুধু আমরা।”
শেষমেশ, তৃষা বিশ্বাস করে।
মুখে নাকাব ছিল, গায়ে ওড়না টানা—কিন্তু ভিডিওটা তোলা হয় রায়হানের পুরনো ফোনে।
🔶 অধ্যায় ৩: ভাইরাল
দিন যায়। হঠাৎ একদিন, রায়হান তৃষার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। বলে—
“আমার পরিবার অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছে।”
তৃষা ভেঙে পড়ে। কাঁদে। যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
১০ দিন পর, “Beni Viral BD” নামের এক ফেসবুক পেইজে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।
ভিডিওর টাইটেল:
"BeniMMS 2025: স্কুল ড্রেসে প্রেমিকা"
ভিডিওতে এক ছেলের সঙ্গে মুখ আড়াল করা মেয়ের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত।
ভিডিওর নিচে কমেন্ট:
- "তৃষা না বুঝি!"
- "চেনা চেনা লাগতেছে মুখটা..."
- "Beni মেয়ে বেহায়া!"
- "এই সেই তৃষা!"
কেউই নিশ্চিত না। কিন্তু তৃষার নাম ছড়ায় আগুনের মতো।
🔶 অধ্যায় ৪: ঘরবন্দি দিনগুলো
তৃষার মোবাইলে আসে শত শত মেসেজ, অচেনা নম্বর থেকে ফোন।
মা দোতলার ঘরে তালা দিয়ে রাখে তাকে।
বাবা অফিস থেকে ফিরেই বলে—“আমার মাথা কাটা গেলো।”
স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয় তার জন্য।
পাড়া পড়ে যায় তোলপাড়ে।
একদিন সকালে, বাসার সামনে আসে ২০-২৫ জন লোক।
তাদের হাতে কাগজ, মোবাইল, কেউ ভিডিও করছে।
তৃষার মা কান্না করে দরজা বন্ধ করে দেয়।
🔶 অধ্যায় ৫: সাহসের শুরু
তৃষা চুপ করে ছিল, কিন্তু তার ভিতরে ক্ষোভ জমা হচ্ছিল।
সে জানত—সে ভিডিওতে আছে ঠিক, কিন্তু সেটা ব্যক্তিগত ছিল, আর সেই ছেলেটি এখন তাকে চেনে না!
সে সিদ্ধান্ত নেয়—চুপ থাকলে চলবে না।
একদিন গভীর রাতে, সে নিজের মোবাইলে রেকর্ড করে একটি ভিডিও:
“আমি তৃষা। আমি ভিডিওতে ছিলাম। কিন্তু সেটা আমি জানতাম না একদিন এমন হবে। আমি ছোট ছিলাম, বিশ্বাস করেছিলাম। আজ আমি বলছি, আমি দোষী নই, আমি প্রতারিত।”
🔶 অধ্যায় ৬: প্রতিশোধ নয়, প্রতিকার
ভিডিওটি সে আপলোড করে নিজের ফেসবুকে।
কয়েক ঘণ্টায় হাজার শেয়ার। মিডিয়ায় খবর—“তৃষা কথা বলল।”
মেয়েরা তার পাশে দাঁড়ায়।
একটি NGO যোগাযোগ করে—“আমরা আপনাকে সাপোর্ট করব।”
তৃষা আইনি সহায়তা নেয়।
সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা হয় রায়হান ও ভিডিও ছড়ানোর মূল অ্যাডমিনের বিরুদ্ধে।
আদালত ৩ মাসের মধ্যে রায়হানকে দোষী সাব্যস্ত করে।
বাকি ছেলেটিরও শাস্তি হয়।
🔶 অধ্যায় ৭: নতুন পরিচয়
তৃষা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে।
সে একটি প্রকল্প চালায়—“Chupi Kotha”—যেখানে ভিডিও শিকার মেয়েরা এসে কথা বলতে পারে।
সে নিজেই মাসে একবার লাইভে আসে, সবাইকে সাহস দেয়।
তৃষা এখন আর শুধু ভাইরালের শিকার না।
সে একজন সচেতন সমাজকর্মী, অনলাইন এডুকেটর, এবং একজন প্রতিবাদী কণ্ঠ।
🔚 সমাপ্তি: ছবির নিচে শুধু নাম নয়
ভিডিওর নিচে “তৃষা” নাম থাকলেই তৃষা দোষী না।
সমাজ এখন বুঝছে—একটা নাম দিয়ে মেয়েকে ধ্বংস করা যায়, আবার সেই নাম দিয়েই বিপ্লব শুরু করা যায়।
গল্পটি ভালো লাগলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না!
🔷 #তৃষারগল্প #বাংলাগল্প #ভাইরালগল্প #MMSস্ক্যান্ডাল #নারীরসম্মান #সাইবারঅপরাধ #সাহসিকতাএকনাম #বাংলাব্লগ #সামাজিকগল্প #ভাইরালভিডিও #গুজব #সত্যিকাহিনি #চুপরকথা #StoryOfCourage #BanglaStory
- Get link
- X
- Other Apps
Popular Posts
কাঁচের ভিতর, ক্যামেরার ফাঁদ — ঢাকার গাড়ির MMS কেলেঙ্কারি
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment